ক্ষুদ্র ব্যবসা শুরু করার ধারাবাহিক ধাপসমূহ - ১০ টি গোপন ফর্মুলা

ক্ষুদ্র ব্যবসা শুরু করার ধারাবাহিক ধাপসমূহ যদি আপনি জানেন তাহলে সফলতা আপনার হাতের মুঠোয় থাকবে। সঠিক পরিকল্পনা, পুঁজি, মার্কেটিং এবং গ্রাহক ধরে রাখার কৌশল আপনাকে অন্য ৮-১০ জনের থেকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। কম ঝুঁকিতে ও কম বিনিয়োগে লাভজনক ব্যবসা দাঁড় করাতে চান? 

ক্ষুদ্র-ব্যবসা-শুরু-করার-ধারাবাহিক-ধাপসমূহ
আজকের আর্টিকেলে আপনি ক্ষুদ্র ব্যবসা শুরু করার ধাপ কয়টি? এবং আপনারা যারা নতুন উদ্যোক্তা আছেন তাদের জন্য সহজ, কার্যকরী গাইড এবং কিভাবে বিনিয়োগ ছাড়া শুরু করে বাজারের প্রতিযোগিতায় টিকে থাকবেন তার কৌশল তুলে ধরব। বিস্তারিত জানতে হলে আজকের আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

পোস্ট সূচিপত্রঃ ক্ষুদ্র ব্যবসা শুরু করার ধারাবাহিক ধাপসমূহ

ক্ষুদ্র ব্যবসা শুরু করার ধারাবাহিক ধাপসমূহ

ক্ষুদ্র ব্যবসা শুরু করার ধারাবাহিক ধাপসমূহ আপনি ঠিকভাবে অনুসরণ করলে আপনার সাফল্যের পথ সহজ হয়ে যাবে। ছোট বীজ সঠিক যত্ন পেলে যেমন একদিন বিশাল গাছে পরিণত হয় তেমনিভাবে ক্ষুদ্র ব্যবসা হলো সেই ছোট বীজ। এখন মনে প্রশ্ন আসতে পারে, কিভাবে শুরু করব? কিভাবে সামনে এগোবো? এসব চিন্তা করতে করতে অনেকেই পিছিয়ে যান। আমি বলব চিন্তার কিছু নেই যদি আপনি সঠিক দিকনির্দেশনা অনুসরণ করেন তাহলে আপনার ছোট ব্যবসা একদিন বড় হয়ে উঠবে। ক্ষুদ্র ব্যবসা শুরু করার ধাপ কয়টি? এবং নতুন ব্যবসা শুরুর প্রস্তুতি আসুন, এক নজরে দেখে নেওয়া যাক

নাম্বার ওয়ান আপনি ব্যবসার জন্য আইডিয়া নির্ধারণ করুন


  • আপনি কোন পণ্য বা সার্ভিস বিক্রি করবেন সেটি আগে নির্ধারণ করুন
  • তারপর দেখুন সেটির চাহিদা বাজারে আছে কিনা বিশেষ করে লোকাল ও অনলাইন মার্কেটেবর্তমান বাজারে কোন ব্যবসাগুলো বেশি জনপ্রিয় এবং লাভজনক সেটি বিশ্লেষণ করুন Food Business, Clothing, E-commerce, Digital Services, Dropshipping ইত্যাদি

নাম্বার টু আপনি মার্কেটিং রিসার্চ এবং প্রতিযোগিতা বিশ্লেষণ করুন


  • আপনার টার্গেট কাস্টমার কে? সেটি নির্ধারণ করুন হতে পারে হতে পারে বয়স, লোকেশন এবং চাহিদা
  • আপনার প্রতিযোগীদের কৌশল এবং দুর্বলতা সম্পর্কে বিস্তারিত বিশ্লেষণ করুন
  • আপনার ব্যবসার জন্য মূল্য নির্ধারণ করুন

নাম্বার থ্রি ব্যবসার জন্য পরিকল্পনা করুন


  • আপনি অনলাইনে, অফলাইনে অথবা অনলাইন ও অফলাইনের সমন্বয়ে ব্যবসা পরিচালনা করবেন কিনা তা নির্ধারণ করুন
  • আপনার ব্যবসার জন্য কি রকম খরচ হবে এবং কত টাকা বিনিয়োগ প্রয়োজন সে সংক্রান্ত পরিমাণ নির্ধারণ করুন
  • আপনাকে রেভিনিউ মডেল নির্ধারণ করতে হবে মানে হল আপনার ব্যবসা থেকে কিভাবে অর্থ উপার্জন করবেন তা ঠিক করা। এটা হতে পারে পণ্য বিক্রি, সাবস্ক্রিপশন অথবা সার্ভিস ফ্রি ইত্যাদি।

নাম্বার ফোর আইনি অনুমোদন এবং ব্যবসার জন্য রেজিস্ট্রেশন করতে হবে


  • আপনি সিটি কর্পোরেশন অথবা পৌরসভা থেকে ট্রেড লাইসেন্স সংগ্রহ করুন
  • আপনাকে ট্যাক্স আইডি তৈরি করতে হবে
  • যদি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট না থাকে তাহলে একটি খুলে নিবেন
  • পরবর্তীতে আপনাকে ভ্যাট নিবন্ধন করতে হবে। যদি এটার প্রয়োজন হয় তাহলে

নাম্বার ফাইভ প্রাথমিক বিনিয়োগ এবং ফান্ডিং সংগ্রহ করা


  • আপনার যদি ব্যক্তিগত সঞ্চয় থাকে তাহলে সেটি ব্যবহার করতে পারেন
  • তাছাড়া পরিবার এবং বন্ধু-বান্ধবদের কাছ থেকে বিনিয়োগ নিতে পারেন
  • আপনি বর্তমানে ব্যাংক থেকে ঋণ অথবা SME ফান্ডের সুযোগ নিতে পারবেন। চেষ্টা করবেন ক্যাশ টাকা দিয়ে করার এবং সুদের মধ্যে না জড়ানোই ভালো। মুসলিম হিসেবে আল্লাহকে ভয় করা উচিত
  • আপনি Crowdfunding প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করতে পারেন যার মানে হচ্ছে অনলাইনে জনগণের কাছ থেকে ছোট ছোট বিনিয়োগ বা অনুদান সংগ্রহ করা। পরিষ্কারভাবে বলতে গেলে আপনি আপনার প্রজেক্ট Kickstarter, Indiegogo, GoFundMe, বা Patreon ইত্যাদি প্লাটফর্মে আপলোড করবেন এবং লোকজন আপনার আইডিয়াকে সমর্থন করতে বিনিয়োগ অথবা অনুদান দেবে।

নাম্বার সিক্স আপনাকে উপযুক্ত জায়গা নির্বাচন করতে হবে


  • যদি আপনি চান অনলাইনে ব্যবসা করতে তাহলে ওয়েবসাইট অথবা সোশ্যাল মিডিয়া পেজ তৈরি করতে হবে
  • আর যদি চান ফিজিক্যাল ভাবে দোকান অথবা অফিস দিতে তাহলে উপযুক্ত লোকেশান নির্বাচন করুন।

নাম্বার সেভেন আপনার ব্যবসার জন্য পণ্য অথবা পরিষেবা তৈরি করা


  • আপনার পণ্যের মান উন্নত করতে হবে
  • সরবরাহ এবং উৎপাদন খরচ কিভাবে কমানো যায় সেটার উপায় খুঁজে বের করুন
  • আপনার পণ্য অথবা সার্ভিসকে অন্যান্য প্রতিযোগিতা থেকে আলাদা এবং আকর্ষণীয়ভাবে গ্রাহকদের কাছে তুলে ধরতে হবে

নাম্বার এইট আপনি ব্র্যান্ডিং এবং মার্কেটিং শুরু করুন


  • আপনার যদি সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম যেমন facebook, instagram, youtube ইত্যাদি থাকে তাহলে মার্কেটিং শুরু করুন
  • গ্রাহকদের আকৃষ্ট করার জন্য আপনি মূল্য ছাড় এবং অতিরিক্ত সুবিধা দিন
  • আপনাকে ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং অথবা লোকাল মার্কেটিং করতে হবে
  • যদি পারেন তাহলে ফেসবুক অ্যাড অথবা google অ্যাড ক্যাম্পেইন পরিচালনা করুন
  • আপনি স্থানীয় বিভিন্ন ইভেন্ট, মেলা অথবা কমিউনিটি কার্যক্রমগুলোতে অংশগ্রহণ করে আপনার ব্যবসার প্রচার এবং নেটওয়ার্ক তৈরি করুন

নাম্বার নাইন পেমেন্ট এবং ডেলিভারি সেটআপ করুন


  • আপনি আপনার ব্যবসার জন্য অনলাইন অথবা অফলাইন লেনদেনের জন্য পেমেন্ট ব্যবস্থা চালু করুন।bKash, Nagad, Rocket, SSLCommerz ইত্যাদি
  • তারপর আপনার কাজ হল ডেলিভারি করার জন্য পার্টনার নির্বাচন করা হতে পারে bKash, Nagad, Rocket, SSLCommerz ইত্যাদি
  • কাস্টমারকে দ্রুত রেসপন্স এবং প্রফেশনাল ভাবে সার্ভিস দিতে আপনি চেষ্টা করবেন

নাম্বার টেন ব্যবসাকে দক্ষতার সঙ্গে পরিচালনা এবং বড় করা


  • আপনার পরিষেবা এবং পুন্য মান উন্নত করতে হবে এবং নিয়মিত কাস্টমার ফিডব্যাক নিতে হবে
  • আপনাকে নিয়মিত ট্র্যাক করতে হবে মাসিক বিক্রয় এবং মুনাফার হিসাব
  • আপনার ব্যবসার উন্নয়নের জন্য সর্বদা চেষ্টা করতে হবে নতুন মার্কেটিং স্ট্রাটেজি বের করার
  • ব্যবসার উন্নয়নের জন্য আপনাকে দক্ষ কর্মী এবং টিম গঠন করতে হবে।

গুরুত্বপূর্ণ কিছু দিকনির্দেশনা

বাংলাদেশে যদি আপনি ক্ষুদ্র ব্যবসা শুরু করতে চান তাহলে সঠিক পরিকল্পনা ধৈর্য এবং ভালো মার্কেটিং জ্ঞান অর্জন করা প্রয়োজন। আপনি যে কাজই করতে যান না কেন অবশ্যই দক্ষতা এবং ভালো কৌশল থাকা আবশ্যক। ইনশাল্লাহ আমি চেষ্টা করেছি আমার সাধ্যমত স্থায়ী এবং লাভজনক ব্যবসা গড়ে তোলার আইডিয়া দিতে। ব্যবসা শুরু করতে চাইলে অবশ্যই আরো বিস্তারিত এবং ডিটেলস জেনে নিবেন।

গুরুত্বপূর্ণ নোটিশঃ ক্ষুদ্র ব্যবসা শুরু করার ধাপসমূহ একটি অপরটির সাথে সম্পর্কিত। সেজন্য কোন ক্ষেত্রে তথ্য মিলে গেলে আপনারা বিভ্রান্ত হবেন না।

ক্ষুদ্র ব্যবসায় পরিকল্পনার বিষয়বস্তু কয়টি

আপনাকে মনে রাখতে হবে ক্ষুদ্র ব্যবসা মানে ছোট পরিসরে কিছু শুরু করা। তার মানে এই নয় আপনার পরিকল্পনা ছোট হবে। পরিকল্পনার ক্ষেত্রে আপনাকে কোন রকম ছাড় দেওয়া চলবে না। পরিকল্পনা অনেক গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটি ছাড়া আপনি ব্যবসা শুরু করলে মাঝপথে গিয়ে ধাক্কা খেতে পারেন। আপনি অবশ্যই চাইবেন আপনার ব্যবসা ধীরে ধীরে বড় হোক সেজন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আপনাকে নজর দিতে হবে। হতে পারে সেটি বাজার বিশ্লেষণ, পরিকল্পনা এবং সঠিক কৌশল ইত্যাদি। একটি ক্ষুদ্র ব্যবসার পরিকল্পনায় কি থাকা জরুরি নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

প্রথম বিষয় ব্যবসার উদ্দেশ্য এবং লক্ষ্য ঠিক করা

আপনার ব্যবসার উদ্দেশ্য কি? আপনি কোন টাইপের ব্যবসা করতে চান? আপনার স্বল্প এবং দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য কি? এসব বিষয় আপনাকে প্রথমেই নির্ধারণ করতে হবে যাতে করে ভবিষ্যতে পথ হারানোর ভয় না থাকে।

দ্বিতীয় বিষয় ব্যবসার ধরন এবং কাঠামো নির্বাচন করুন

আপনি কি একা মালিক হতে চান অথবা অংশীদারিত্ব নাকি কোম্পানি এটি আপনাকে আগেই নির্ধারণ করতে হবে। যদি আপনি একা ব্যবসা করতে চান তাহলে সব দায়িত্ব আপনার। আর যদি অংশীদারিত্ব হয় তাহলে লাভ এবং দায়িত্ব আগেই ভাগ করে নিতে হবে। আর যদি আপনি কোন কোম্পানি গঠন করতে চান তাহলে আইনি দিকও দেখতে হবে।

তৃতীয় বিষয় আপনাকে বাজার বিশ্লেষণ করতে হবে


  • আপনার গ্রাহক কারা হবে অথবা সম্ভাব্য গ্রাহক কারা সেটা নির্বাচন করুন
  • যেখানে বিক্রি বেশি হবে সেই জায়গা নির্বাচন করুন
  • আপনার প্রতিযোগীরা কিভাবে কাজ করছে সেটি লক্ষ্য করুন

চতুর্থ বিষয় আপনার প্রতিযোগীদের কার্যকলাপ বিশ্লেষণ করুন


  • তারা কি দামে পণ্য বিক্রি করছে সেটা দেখুন
  • তারা কিভাবে পণ্যটির মার্কেটিং করছে সেটা যাচাই করুন
  • রিসার্চ করে বের করুন তাদের থেকে কিভাবে ভালো সার্ভিস দেওয়া যায়

পঞ্চম বিষয় পণ্য এবং সেবা সম্পর্কে আপনি পরিকল্পনা করুন


  • আপনার ব্যবসার মন পণ্য ও পরিষেবা কি হবে সেটা নির্বাচন করুন
  • আপনি আপনার প্রোডাক্টের দাম কত রাখবেন সেটা নির্ধারণ করুন
  • পণ্য এবং সেবার নাম নির্ধারণ করুন
  • আপনি কিভাবে সেটি বানাবেন এবং সংগ্রহ করবেন আগে থেকেই সংকল্প করুন
  • সেটির মান কেমন হবে বিষয়টি সম্পর্কে ভেবে দেখবেন

ষষ্ঠ বিষয় ব্যবসার জন্য পদ্ধতি ঠিক করুন


  • আপনার ব্যবসার দৈনন্দিন কাজ কিভাবে চলবে সেটা নির্ধারণ করুন
  • কাঁচামাল সংগ্রহ, উৎপাদন ও সঞ্চয়, বিক্রয় ও সরবরাহ এবং গ্রাহক সেবা এগুলো সম্পর্কে আগে থেকেই ভেবে রাখুন

সপ্তম বিষয় আর্থিক পরিকল্পনা তৈরি করুন


  • ব্যবসার জন্য কত টাকা দরকার হতে পারে সেটি ভাবুন
  • কাঁচামাল, দোকান এবং অফিস ভাড়া, বিদ্যুৎ বিল, কর্মচারীর বেতন, লাইসেন্স, পরিবহন এবং লাভ ইত্যাদি পরিকল্পনা করুন

অষ্টম বিষয় আপনার ব্যবসার সম্প্রসারণ পরিকল্পনা করুন


  • ব্যবসা যদি ভালো চলে তাহলে আপনি ভবিষ্যতে কি করবেন সেটা ভেবে দেখুন
  • নতুন পূর্ণ যোগ করবেন কিনা, অন্য শহরের ব্যবসা বাড়াবেন কিনা এবং অনলাইনে বিক্রি করবেন কিনা আগে থেকে পরিকল্পনা করুন

গুরুত্বপূর্ণ কিছু দিকনির্দেশনা

আপনি যদি সফল ব্যবসা গড়ে তুলতে চান সেক্ষেত্রে সঠিক পরিকল্পনা অত্যন্ত জরুরী। সঠিক পরিকল্পনা ছাড়া আপনি ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে পারবেন না। এই পরিকল্পনা আপনাকে সঠিকভাবে ব্যবসা চালাতে সাহায্য করবে এবং কোন সমস্যা হওয়ার আগেই আপনি সহজে প্রস্তুত থাকতে পারবেন। যারা বিনিয়োগ করবে তারা সহজে বুঝতে পারবে আপনার পরিকল্পনা কতটা কার্যকরী।

ব্যবসা শুরু করার পদ্ধতি গুরুত্বপূর্ণ ৫ টি ধাপ

আমাদের মাঝে অনেক ভুল ধারণা রয়েছে যেমন অনেকে মনে করেন ব্যবসা শুরু করা মানে শুধু টাকা বিনিয়োগ করা, বিষয়টি কিন্তু এমন নয়। ব্যবসা করার মূল চাবিকাঠি হলো সঠিক পরিকল্পনা এবং উপায় খুঁজে বের করা। আপনি দেখবেন অনেকে নিজে পণ্য বানিয়ে বিক্রি করে অথবা অন্যের পণ্য বিক্রি করে। আবার কেউ একা শুরু করে অথবা পার্টনার নিয়ে। সবই তো বুঝলেন কিন্তু কোন পদ্ধতি আপনার জন্য সবচেয়ে ভালো? সেই সম্পর্কে জানতে নিচে বিস্তারিত ধারণা দেওয়া হলো।

প্রথম পদ্ধতি প্রোডাক্ট ভিত্তিক ব্যবসা

আপনার কাছে যদি এমন কোন পণ্য থাকে যা বাজারে বিক্রি করা সম্ভব তাহলে কিছু পদ্ধতি আপনি অনুসরণ করুন। পণ্য তৈরি করুন যদি পারেন নিজে তৈরি করার চেষ্টা করবেন। তারপর সরবরাহকারীর কাছ থেকে পণ্য সংগ্রহ করুন এবং বাজারে প্রচার করার পর বিক্রয় শুরু করুন।

বোঝার সুবিধার্থে উদাহরণস্বরূপঃ 

  • জামাকাপড় নিজের হাতে বানিয়ে বিক্রি করতে পারেন
  • কসমেটিকস, মোবাইল অ্যাক্সেসরিজ অথবা গৃহস্থালি পণ্য বিক্রি করুন 
  • আমদানি করা কোন পণ্য থাকলে সেটি অনলাইনে অথবা দোকানে বিক্রি করুন

দ্বিতীয় পদ্ধতি সার্ভিস ভিত্তিক ব্যবসা

যদি আপনার ভালো দক্ষতা থাকে তাহলে আপনি পণ্য বিক্রি না করে সেটি অন্যদের সার্ভিস প্রদানের মাধ্যমে আয় করতে পারবেন। সে জন্য কিছু বিষয়ে আপনার দক্ষতা থাকতে হবে। হতে পারে ডিজাইন, মার্কেটিং, আইটি, ট্রেনিং ইত্যাদি। তারপর আপনার কাজ হল বাজারে চাহিদা দেখা এবং সে অনুযায়ী কাস্টমারদের অনলাইন অথবা সরাসরি সার্ভিস প্রদান করে আয় করুন।

বোঝার সুবিধার্থে উদাহরণস্বরূপঃ 

  • গ্রাফিক্স ডিজাইন, ওয়েব ডিজাইন এবং ডিজিটাল মার্কেটিং
  • অনলাইন টিউশনি, ফ্রিল্যান্সিং এবং কনসালটেন্সি
  • ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট এবং ট্রেনিং সেন্টার

তৃতীয় পদ্ধতি ট্রেডিং ভিত্তিক ব্যবসা

এখানে সরাসরি আপনি পণ্য উৎপাদন করবেন না বরং পাইকারি বাজার থেকে কম দামে কিনে সেটি খুচরা বিক্রি করবেন। সেজন্য আপনাকে বিশ্বস্ত পাইকারি সরবরাহকারী খোঁজার পাশাপাশি সঠিক পণ্য বেছে নিতে হবে। তারপরে আপনি পণ্য স্টক করুন এবং ড্রপ শিপিং ব্যবহার করুন। এরপরে আপনার কাজ হল বিক্রয় এবং ডেলিভারির ব্যবস্থা করা।

বোঝার সুবিধার্থে উদাহরণস্বরূপঃ 

  • অল্প কথায় পাইকারি বাজার থেকে পণ্য কিনুন এবং অনলাইনে অথবা দোকানে বিক্রি করুন
  • আপনি স্টকে না রেখে ড্রপ শিপিং এর মাধ্যমে বিক্রি করুন
  • আপনি ইমপোর্ট করবেন এবং এক্সপোর্ট করবেন

চতুর্থ পদ্ধতি ফ্র্যাঞ্চাইজি ভিত্তিক ব্যবসা

আপনারা যারা একেবারে নতুন কিন্তু নিরাপদে ব্যবসা করতে চান তারা একটি বড় ব্র্যান্ডের অধীনে  ফ্র্যাঞ্চাইজি মানে-- এটি মানে হল বড় কোন কোম্পানি তার নাম পণ্য অথবা পরিসেবা ব্যবহারের অনুমতি দেয় -- নিয়ে ব্যবসা শুরু করতে পারেন।  ফ্র্যাঞ্চাইজি করতে হলে আপনাকে কিছু নিয়ম ও শর্ত মেনে নিতে হবে। 

বোঝার সুবিধার্থে উদাহরণস্বরূপঃ 

  • বিকাশ, নগদ, অথবা রকেট এজেন্ট ব্যবসা
  • বর্তমানে জনপ্রিয় কিছু খাবারের চেইন যেমনঃ Pizza Hut, KFC, শাহী দই ঘর ইত্যাদি
  • কিছু ব্র্যান্ডের পোশাকের আউটলেট যেমনঃ Easy, Infinity, Aarong ইত্যাদি

পঞ্চম পদ্ধতি অনলাইন ভিত্তিক ব্যবসা

বর্তমান এই তথ্য প্রযুক্তির জামানায় সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে অনলাইনে ব্যবস্থা করা সবচেয়ে লাভজনক ও সহজ পদ্ধতি হয়ে দাঁড়িয়েছে। আপনাকে সরাসরি দোকান খোলার প্রয়োজন নেই। যা হবে সব অনলাইনে। সেজন্য আপনি কোন পণ্য বা সার্ভিস বিক্রি করবেন সেটা নির্ধারণ করুন। সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে বিজ্ঞাপন দিন এবং কাস্টমারের অর্ডার আসলে সঠিক সময়ে গন্তব্যস্থলে ডেলিভারির ব্যবস্থা করুন।

বোঝার সুবিধার্থে উদাহরণস্বরূপঃ 

  • সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ফেসবুক পেজ অথবা ওয়েবসাইটে পণ্য বিক্রি করুন
  • পাশাপাশি ইউটিউব চ্যানেল বা ব্লগ থেকে আয়
  • ফ্রিল্যান্সিং অথবা রিমোট মানে -- দূর থেকে অনলাইনে প্রদান করা হয় -- সার্ভিস প্রদান করুন।

অতিরিক্ত বিষয় আপনার জন্য কোনটি সেরা


  • আলহামদুলিল্লাহ যদি নিজে পণ্য বানাতে পারেন তাহলে প্রোডাক্ট ভিত্তিক ব্যবসা আপনার জন্য ভালো
  • আপনার যদি কনফিডেন্ট থাকে নিজের দক্ষতা সম্পর্কে তাহলে সার্ভিসভিত্তিক ব্যবসা ভালো
  • যদি কম বিনিয়োগে ব্যবসা করতে চান তাহলে ট্রেডিং অথবা ফ্র্যাঞ্চাইজি ব্যবসা শুরু করে দেখতে পারেন
  • আর যদি আপনি এরকম চান যে ঝুঁকি কমিয়ে ব্যবসা তাহলে অনলাইন ব্যবসা আপনার জন্য সেরা মাধ্যম হতে পারে

স্মার্ট ব্যবসা আইডিয়া ২০২৫ বিশেষ কি থাকছে 

বর্তমানে ডিজিটাল প্রযুক্তির সাথে আপনাকেও একধাপ এগিয়ে যেতে হবে। স্মার্ট ব্যবসা বলতে আমরা বুঝি কম সময়ে, কম পরিশ্রমে, কম বিনিয়োগ বেশি লাভ। এটি সম্ভব প্রযুক্তি, ইন্টারনেট এবং সৃজনশীল চিন্তার মাধ্যমে। একটু লক্ষ্য করে দেখুন আপনার আশেপাশে অনেকেই করছে। এটির জন্য আপনাকে দোকান খুলে বসে থাকতে হবে না ঘরে বসেই ডিজিটাল পদ্ধতির মাধ্যমে পণ্য বিক্রি করতে পারবেন। সঠিক দিক নির্দেশনা এবং ডিজিটাল সুযোগ কাজে লাগিয়ে সহজেই আপনি স্মার্ট বিজনেস শুরু করতে পারবেন।

প্রথম আইডিয়া এ আই ভিত্তিক বিজনেস

এটি এমন একটি ব্যবসা যেখানে আপনি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে বিভিন্ন ধরনের সমস্যার সমাধান দিতে পারবেন। আপনি কাস্টমার সার্ভিসের জন্য এআই চ্যাটবট ব্যবহার করতে পারবেন। তাছাড়া আপনি অটোমেশন সফটওয়্যার এর মাধ্যমে কোম্পানির বিভিন্ন কাজ করে দিতে পারবেন এতে করে সময় খুব কম লাগে।

এটি কি বাংলাদেশের জন্য উপযোগী

বর্তমানে এআই নিয়ে কাজ শুরু করা চমৎকার একটি সিদ্ধান্ত হবে। কারণ বর্তমানে এখন বড় বড় কোম্পানিগুলো আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্ট প্রযুক্তির ব্যবহার করছে।

দ্বিতীয় আইডিয়া স্বাস্থ্য এবং ওয়েলনেস টেকনোলজির ব্যবহার

এটি এমন একটি ব্যবসা যেখানে আপনি ঘরে বসে ডিজিটাল প্রযুক্তির মাধ্যমে চিকিৎসা নিতে পারবেন। হতে পারে সেটি ডাক্তারের সঙ্গে ভিডিও কলে কথা বলে। তাছাড়া স্বাস্থ্য এবং অন্যান্য বিষয়ের গাইডলাইন থাকে যেমন অনলাইনে কাউন্সেলিং ও মেডিটেশন গাইড মানে মানসিক চাপ কমাতে এবং মনকে শান্ত রাখতে যে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।

এটি বাংলাদেশের জন্য কেমন হবে

বর্তমানে বাংলাদেশে অনলাইনে ডাক্তার পরামর্শ এবং অন্যান্য বিষয় যেমন স্বাস্থ্য অ্যাপের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে তাই এটি আপনার জন্য লাভজনক হতে পারে।

তৃতীয় আইডিয়া Fractional C-Suite & Consulting Services

সহজ ভাবে বলতে গেলে মনে করুন আপনার একটি ব্যবসা আছে কিন্তু বড় কোম্পানির মতো ফুল টাইম একজন  CEO রাখার সামর্থ্য নেই। কারণ তাদের বেতন তুলনামূলক বেশি। এই সমস্যা সমাধানের জন্যই ফ্রাকশনাল C-সুইট। বড় কোম্পানির অভিজ্ঞ সম্পন্ন C পদের কর্মকর্তা ফুল টাইম না করে খন্ডকালীন কাজ করেন এতে করে কম খরচে আপনার ব্যবসার দক্ষতা বৃদ্ধি পায়।

বাংলাদেশের জন্য এটি কি উপযোগী

যদিও এটি বাংলাদেশের জন্য এখনো তেমন জনপ্রিয় না তবে যারা নতুন শুরু করতে চাচ্ছেন অথবা ছোট ব্যবসা গুলোর জন্য ভালো হতে পারে।

চতুর্থ আইডিয়া নিশ ডিজিটাল মার্কেটিং এজেন্সি

সহজ ভাবে বলতে গেলে এটি এমন একটি ডিজিটাল মার্কেটিং ব্যবসা যেটি একটি নির্দিষ্ট বাজার এর জন্য কাজ করে থাকে। ই-কমার্স মার্কেটিং এজেন্সি যারা শুধু ই-কমার্স এর মার্কেটিং করে থাকেন অন্যদিকে টেক স্টার্টআপ মার্কেটিং যারা শুধুমাত্র কোম্পানিগুলোর জন্য ডিজিটাল বিজ্ঞাপন করে থাকেন।

বাংলাদেশের জন্য কেমন হবে

বর্তমান বাংলাদেশ ই-কমার্স এবং স্টার্ট আপ দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে তাই ডিজিটাল মার্কেটিং ব্যবসার বিশাল একটি সুযোগ তৈরি হচ্ছে

পঞ্চম আইডিয়া সফটওয়্যার এস এ সার্ভিস

এখানে আপনি সফটওয়্যার তৈরি করে সাবস্ক্রিপশন ভিত্তিতে বিক্রি করতে পারবেন। উদাহরণস্বরূপ ক্লাউড একাউন্টিং সফটওয়্যার QuickBooks বা Xero। হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যার মানে মনে করুন আপনার কোম্পানিতে অনেক কর্মী রয়েছে। এখন তাদেরকে হায়ার করা, উপস্থিতি দেখা, বেতন দেওয়া এবং ছুটি সংক্রান্ত বিষয় কাজের মূল্যায়ন ইত্যাদি যদি আপনি ম্যানুয়ালি করতে চান তাহলে সময় এবং কাগজপত্র ভুল হওয়া সম্ভাবনা থাকবে। এটির জন্য হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যার, যাতে করে কম সময়ে আপনি সহজেই সবকিছু ম্যানেজ করতে পারেন।

বাংলাদেশের জন্য ভালো হবে কি

বর্তমান বাংলাদেশ অনলাইনে পেমেন্ট এবং ক্লাউড সফটওয়্যার ব্যবহার বাড়ছে। সেজন্য এটি আপনার জন্য লাভজনক হতে পারে।

ষষ্ঠ আইডিয়া এসিডিয়েট মার্কেটিং এবং কনটেন্ট ক্রিয়েশন

এটির সম্পর্কে আপনারা সবাই কমবেশি পরিচিত, এটি এমন একটি ব্যবসা যেখানে ইউটিউব, ব্লগ অথবা সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে বিভিন্ন ধরনের কোম্পানির প্রোডাক্ট প্রচার প্রচারণা করে ভালো কমিশন পাওয়া যায়। আপনি ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করে কোন একটি নির্দিষ্ট বিষয়ের উপর ভিত্তি করে সেটির ভিডিও তৈরি করা এবং ব্লগিং অথবা এফিলিয়েট মার্কেটিং এর মাধ্যমে অ্যামাজন অথবা জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্ম গুলোর প্রোডাক্ট রিভিউ লিখে ইনকাম করা।

বাংলাদেশের জন্য উপযুক্ত কি

ফেসবুক, ইউটিউব এবং ব্লগিং এর জনপ্রিয়তা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে, তাই আপনি এটি সহজেই শুরু করতে পারেন।

সপ্তম আইডিয়া রিনিউএবল এনার্জি বিজনেস

এটার মানে হলো নবায়নযোগ্য জ্বালানি নিয়ে ব্যবসা করা। যদি আমি সহজভাবে বলতে যায় তাহলে এটি এমন একটা ব্যবসা যেখানে আপনি প্রাকৃতিক উৎস থেকে বিদ্যুৎ এবং শক্তি উৎপন্ন করে সেটি বিক্রি করা। উদাহরণস্বরূপ সোলার প্যানেল দিয়ে বিদ্যুৎ তৈরি করা, উইন্ড টারবাইন দিয়ে বিদ্যুৎ তৈরি, পানি প্রবাহ দিয়ে বিদ্যুৎ তৈরি অথবা কৃষি এবং অন্যান্য প্রাণীর বর্জ্য থেকে গ্যাস এবং বিদ্যুৎ উৎপাদন।

আমাদের বাংলাদেশের জন্য এটি কেমন

বর্তমান বাংলাদেশে সৌর বিদ্যুৎ খাতের বিকাশ ঘটছে, এজন্য  আপনার কাছে যদি বিনিয়োগ বেশি থাকে সেক্ষেত্রে শুরু করতে পারবেন কিন্তু নতুনদের জন্য একটু কঠিন হতে পারে।

কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা


  • যদি আপনার মূলধন অল্প হয় এবং আপনি চান ব্যবসা শুরু করতে তাহলে আপনার জন্য অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং, ডিজিটাল মার্কেটিং অথবা Software as a Service ভালো হবে। 
  • যদি আপনার মূলধন বড় হয় এবং বিনিয়োগ করার মন মানসিকতা থাকে তাহলে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্ট, টেলিমেডিসিন অথবা সোলার এনার্জি বিজনেস বেস্ট অপশন।

ব্যক্তিগত মতামতঃ ক্ষুদ্র ব্যবসা শুরু করার ধারাবাহিক ধাপসমূহ

ক্ষুদ্র ব্যবসা শুরু করার ধারাবাহিক ধাপসমূহ জানলে ব্যবসায় উন্নতি করা কোন ব্যাপারই না। আপনি যদি নতুন ক্ষুদ্র ব্যবসা শুরু করতে চান সেক্ষেত্রে আমি বলব ক্ষুদ্র ব্যবসা শুরু করার ধারাবাহিক ধাপসমূহ আপনাকে সঠিকভাবে জেনে নিতে হবে। আমি চেষ্টা করেছি আপনাকে আমার সবটুকু দিয়ে আইডিয়া দিতে। যদিও আমি খুব কম বুঝি সেজন্য আমি বলব ব্যবসা শুরুর আগে আপনি আপনার ব্যবসা সংক্রান্ত যাবতীয় বিষয় ডিটেইলস জেনে নিবেন।
যদি আপনি মুসলিম হোন তাহলে চেষ্টা করবেন হালাল ভাবে একটি ব্যবসা দাঁড় করানোর। অন্যান্য কাজের তুলনায় ব্যবসায় অনেক বরকত। আমি যে সমস্ত ক্ষুদ্র ব্যবসার ধারাবাহিক ধাপসমূহ আলোচনা করলাম সেটি যদি ভালো লাগে তাহলে আপনি শুরু করতে পারেন। আজকের আর্টিকেলটির মাধ্যমে যদি আপনি উপকৃত হন তাহলে শেয়ার করতে ভুলবেন না। আপনার সুস্থতা কামনা করে আজকের মতো এখানেই শেষ করছি আল্লাহ হাফেজ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

সব বাজ ব্লগিং ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url