পড়াশোনায় মনোযোগ ধরে রাখার উপায়
পড়াশোনায় মনোযোগ ধরে রাখার উপায় সম্পর্কে জানা প্রত্যেকটি শিক্ষার্থীর জন্য
অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অধিকাংশ মানুষেরই পড়াশোনা করতে মন চায় না। তাহলে
আপনি আমাকে বলতে পারেন, এত বড় বড় ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, অধ্যাপক, চিকিৎসক কি
করে হলো?
আসলে
তারা পড়াশোনায় তাদের মন বসিয়েছিল। পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট করতে হলে পড়ালেখার
প্রতি মনোযোগী হতে হবে। পড়তে বসলেই আমাদের মাথায় হাজারো রকম চিন্তা চলে আসে যার
ফলে কিছুই পড়া হয় না। আপনি কীভাবে পড়াশোনায় মনোযোগ ধরে রাখবেন সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা থাকছে এই পোস্টে।
পোস্ট সূচিপত্রঃ
পড়াশোনায় মনোযোগ ধরে রাখার উপায়
- পড়াশোনায় মনোযোগ ধরে রাখার উপায়
- পড়াশোনার জন্য রুটিন তৈরি করুন
- আপনার লক্ষ্য বা টার্গেট নির্ধারণ করুন
- মনোযোগ ধরে রাখতে বিভ্রান্তি কমিয়ে আনুন
- পড়ার মাঝে বিরতি নেওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন
- রাতে ঘুমানোর অভ্যাস গড়ে তুলুন
- স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন
- পড়াশোনায় মনোযোগ ধরে রাখতে নিয়মিত ব্যায়াম করুন
- বন্ধুদের সাথে গ্রুপ স্টাডি করুন
- ব্যক্তিগত মতামতঃ পড়াশোনায় মনোযোগ ধরে রাখার উপায়
পড়াশোনায় মনোযোগ ধরে রাখার উপায়
পড়াশোনায় মনোযোগ ধরে রাখার উপায় হলো, সবার প্রথমে আপনাকে সঠিক স্থান নির্বাচন
করতে হবে। আপনার যদি বিছানায় পড়াশোনা করার অভ্যাস থাকে তাহলে সেটি বাদ দিতে হবে
কারণ সেখানে মনোযোগ ধরে রাখা অত্যন্ত কঠিন কাজ। আপনি যখন বিছানায় বসবেন বিছানার
আরাম সহজেই আপনাকে গ্রাস করে নিতে পারে। এর পরিবর্তে পড়াশোনার জন্য
অন্য জায়গা নির্বাচন করুন যা আলোকিত, আরামদায়ক, এবং কোলাহলমুক্ত।
বিশেষজ্ঞদের মতে,পড়াশোনায় মনোযোগ ধরে রাখার উপায় গুলোর মধ্যে একটি হলো যেখানে
পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা রয়েছে। এতে করে চোখের উপর চাপ কম পড়ে এবং আপনার
মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা ঠিক রাখে। পড়ার স্থান গুছিয়ে রাখুন। পড়ার
জায়গায় বই, খাতা, কলম অন্যান্য যাবতীয় জিনিস এলোমেলো থাকলে মন অস্থির হয়ে
ওঠে। নির্দিষ্ট স্থানে পড়তে বসুন, প্রতিদিন একই স্থানে পড়তে বসলে আপনার
মস্তিষ্ক বুঝতে পারে এখন পড়ার সময়।
পড়াশোনার জন্য রুটিন তৈরি করুন
পড়াশোনার জন্য আপনাকে একটি নিয়মিত রুটিন তৈরি করতে হবে। কারণ এটি পড়াশোনায়
মনোযোগ ধরে রাখার শক্তিশালী একটি উপায়। মাঝেমধ্যে পড়াশোনায় মনোযোগ করে
রাখা কঠিন হয়ে পড়ে, তখন এই নিয়মিত রুটিন আপনাকে সাহায্য করবে। গবেষণা
থেকে আমরা জানতে পারি, রুটিন বিহীন যারা চলাফেরা করে সফলতা দিক থেকে তার অনেক
পিছিয়ে। পৃথিবীর সব কিছু যেখানে রুটির মাফিক হচ্ছে আপনাকেও রুটিন করে
পড়াশোনা করতে হবে।
প্রতিদিন পড়াশোনার জন্য আপনাকে একটি নির্দিষ্ট সময় বের করতে হবে। এতে করে আপনার মস্তিষ্ক বুঝতে পারে কখন পড়াশোনা করার সময় এবং কখন বিশ্রাম নেওয়ার সময়। আপনার যদি রাত জেগে পড়াশোনা করার অভ্যাস থাকে তাহলে এখনই ত্যাগ করুন। রাত জাগা অনেকে ভালো মনে করেন কিন্তু এটি ঘুমের অভাব তৈরি করে যা আপনার স্বাস্থ্য এবং পড়ার দক্ষতা নষ্ট করে দেয়।
পড়াশোনার সময় সূচি আপনার পছন্দ অনুযায়ী সাজাতে পারেন। অনেক শিক্ষার্থী আছে যারা রঙিন চার্ট পছন্দ করে। সেখানে তারা সব বিষয় এবং পড়াশোনার পরিকল্পনা লিখে রাখে। আবার কেউ কেউ ক্যালেন্ডার অ্যাপ বা চকবোর্ড ব্যবহার করতে পছন্দ করে। অনেকে আছেন খুব ভোরে পড়াশোনা করতে ভালোবাসেন তাহলে সেই সময়টাকে অগ্রাধিকার দিন। আপনার সময়সূচি এমন জায়গায় লিখে রাখুন যেখানে খুব সহজে আপনার চোখ পড়বে।
প্রতিদিন পড়াশোনার জন্য আপনাকে একটি নির্দিষ্ট সময় বের করতে হবে। এতে করে আপনার মস্তিষ্ক বুঝতে পারে কখন পড়াশোনা করার সময় এবং কখন বিশ্রাম নেওয়ার সময়। আপনার যদি রাত জেগে পড়াশোনা করার অভ্যাস থাকে তাহলে এখনই ত্যাগ করুন। রাত জাগা অনেকে ভালো মনে করেন কিন্তু এটি ঘুমের অভাব তৈরি করে যা আপনার স্বাস্থ্য এবং পড়ার দক্ষতা নষ্ট করে দেয়।
পড়াশোনার সময় সূচি আপনার পছন্দ অনুযায়ী সাজাতে পারেন। অনেক শিক্ষার্থী আছে যারা রঙিন চার্ট পছন্দ করে। সেখানে তারা সব বিষয় এবং পড়াশোনার পরিকল্পনা লিখে রাখে। আবার কেউ কেউ ক্যালেন্ডার অ্যাপ বা চকবোর্ড ব্যবহার করতে পছন্দ করে। অনেকে আছেন খুব ভোরে পড়াশোনা করতে ভালোবাসেন তাহলে সেই সময়টাকে অগ্রাধিকার দিন। আপনার সময়সূচি এমন জায়গায় লিখে রাখুন যেখানে খুব সহজে আপনার চোখ পড়বে।
আপনার লক্ষ্য বা টার্গেট নির্ধার্নার করুন
জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে লক্ষ্য নির্ধারণ করা অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ। পড়ায় মন বসে না কেন? এই প্রশ্নটি অনেক স্টুডেন্টদের মনে ঘুরপাক খায়। এর প্রধান কারণ হলো পড়াশোনার জন্য আপনার মধ্যে সঠিক পরিকল্পনা এবং লক্ষ্যের অভাব। পড়াশোনার ক্ষেত্রে লক্ষ্য নির্ধারণ আপনাকে স্পষ্টতা এবং অনুপ্রেরণা দিতে পারে। আপনার পড়ার বিষয়বস্তুকে ছোট ছোট অংশে ভাগ করুন। এরপর নির্দিষ্ট, অর্জনযোগ্য এবং পরিমাপযোগ্য লক্ষ্য দিয়ে সহজে শুরু করতে পারেন। যেমনঃ- আপনাকে টার্গেট নিতে হবে প্রতিদিন একটি করে অধ্যায় শেষ করার।
- প্রতিদিন নির্দিষ্ট সংখ্যক শব্দ লেখার অভ্যাস গড়ে তুলুন।
- শনিবার থেকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬ টা থেকে রাত ৮ টা পর্যন্ত ২ ঘন্টা পড়াশোনা করুন।
- প্রতিরাতে আপনাকে চেষ্টা করতে হবে একটি নির্দিষ্ট বইয়ের একটি অধ্যায় সম্পূর্ণ করার।
মনোযোগ ধরে রাখতে বিভ্রান্তি কমিয়ে আনুন
পড়াশোনায় মনোযোগী হওয়ার উপায় হলো বিভ্রান্তি কমিয়ে আনুন। পড়ার সময় যাবতীয় ইলেকট্রনিক ডিভাইস যেমন মোবাইল, ল্যাপটপ হাতের কাছে না রাখা ভালো। ইন্টারনেট বন্ধ করে পড়তে বসবেন। এতে করে সোশ্যাল মিডিয়ার নোটিফিকেশনের শব্দ আপনার কানে আসবে না। রাস্তায় যানবাহনের শব্দ বা রুমমেটের কোলাহল থেকে বাঁচতে হেডফোন ব্যবহার করতে পারেন। এতে করে আপনি পড়াশোনায় মনোযোগ দিতে পারবেন।পড়ার মাঝে বিরতি নেওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন
পড়ার মাঝে বিরতি না নিলে মস্তিষ্ক ক্লান্ত হয়ে যাবে যার ফলে আপনার
ব্রেন ধীর গতিতে কাজ করবে। সারাদিন পড়াশোনা করার উপায় হলো আপনি ঘণ্টার পর
ঘণ্টা পড়াশোনা না করে মাঝে মাঝে ৫-১০ মিনিটের বিরতি নিন। বিরতির এই সময়টুকু হাঁটাহাঁটি করুন, চোখ বন্ধ করে থাকুন, বিশ্রাম নিন। গবেষণায় দেখা গেছে যারা
পড়ার মাঝে মাঝে বিরতি নেয় তারা দীর্ঘ সময় ধরে পড়াশোনায় মনোযোগ ধরে
রাখতে পারে এবং অল্প সময়ে অধিক পড়া কমপ্লিট করতে পারে।
রাতে ঘুমানোর অভ্যাস গড়ে তুলুন
আমাদের মধ্যে অনেকেরই রাত জাগার অভ্যাস আছে। এমনও কিছু মানুষ আছে যারা সারা রাত
জেগে থাকে এবং সারাদিন ঘুমায়। আপনার মধ্যে যদি এই বাজে অভ্যাস থেকে থাকে
তাহলে এখনই পরিত্যাগ করুন। আর রাতে ঘুমানোর অভ্যাস গড়ে তুলুন। ঘুম
আপনার মস্তিষ্ককে তথ্য প্রক্রিয়াকরণ এবং একত্রিত করতে সাহায্য করে। তাছাড়া
স্মৃতিশক্তি এবং বোধগম্যতা উন্নত করে।
আপনি যদি মনে করে থাকেন ঘুম শুধু আমাদের শারীরিক সুস্থতার জন্য তাহলে আপনি
ভুল। এটি যেমন আমাদের শারীরিক সুস্থতার জন্য অত্যন্ত উপকারী তেমনিভাবে
মনোযোগ বৃদ্ধির উপায় হিসেবেও কাজ করে। প্রতিদিন আপনাকে ৭-৮ ঘন্টা ঘুমাতে
হবে। এতে করে আপনি সতেজ থাকবেন এবং সারাদিনের কাজকর্মগুলো অনায়াসেই করতে
পারবেন। চেষ্টা করবেন প্রতিদিন একই সময় ঘুমানোর। ঘুমানোর আগে
মোবাইল,ল্যাপটপ চা,কফি এগুলো এড়িয়ে চলুন।
স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন
শিক্ষার্থীদের মনোযোগ বৃদ্ধির কৌশল হিসেবে স্বাস্থ্যকর খাবারের কোন বিকল্প
নেই। ভালো স্বাস্থ্যসম্মত খাবার হলো আমাদের মস্তিষ্কের
জ্বালানি। স্বাস্থ্যকর খাবারের পাশাপাশি প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন।
কারণ এটি আপনার মনোযোগ এবং শক্তির স্তরকে বাড়াতে সাহায্য করে। জাঙ্কফুড
খাবারের প্রতি আমাদের প্রত্যেকেরই একটি দুর্বলতা কাজ করে। কিন্তু এগুলো
খাওয়া যাবে না।
জাঙ্কফুড আপনার মস্তিষ্কের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। এর পরিবর্তে আপনি সবুজ
শাকসবজি, তাজা ফল, এবং গোটা শস্য খান। আপনার মস্তিষ্কের জন্য সেরা খাবারগুলো
হতে পারে কাজুবাদাম, কাঠ বাদাম, চিনা বাদাম, মাছ, ডিম ইত্যাদি। এ
সমস্ত খাবারে ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে। পড়াশোনার সময়
হাইড্রেটেড থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সেজন্য পড়াশোনার সময় আপনার সাথে
একটি পানির বোতল রাখুন।
পড়াশোনায় মনোযোগ ধরে রাখতে নিয়মিত ব্যায়াম করুন
পড়ালেখায় ভালো হওয়ার কৌশল মানে এই নয় যে, আপনি ঘন্টার পর ঘন্টা টেবিলে বসে
থাকবেন। একজন শিক্ষার্থী হিসেবে আপনার স্বাস্থ্য এবং সুস্থতা সম্পর্কে সচেতন
হতে হবে। আপনাকে নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে। নিয়মিত ব্যায়াম
মস্তিষ্কে রক্ত প্রবাহ বৃদ্ধি করে, মনোযোগ বৃদ্ধি করে এবং নতুন তথ্য ধরে
রাখে। সেজন্য আপনার রুটিনে ব্যায়াম অন্তর্ভুক্ত করুন।
বন্ধুদের সাথে গ্রুপ স্টাডি করুন
যখন আপনি গ্রুপ তৈরি করে পড়াশোনা করবেন, তখন কঠিন বিষয়গুলো খুব সহজেই বুঝতে
পারবেন। এছাড়া গ্রুপ স্টাডি করলে একে অপরের সঙ্গে নোট আদান প্রদান করা যায়,
প্রশ্ন করা যায় এবং বন্ধুদের কাছ থেকে নতুন নতুন আইডিয়া শেখা যায়। বন্ধুদের
সাথে গ্রুপ স্টাডি করলে পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ বাড়ে, সহজেই মনোযোগ ধরে রাখা
যায় এবং পড়াশোনার বিষয়গুলো ভালোভাবে মনে থাকে। আপনাকে সতর্ক থাকতে হবে
গ্রুপ স্টাডি যেন কোনোভাবেই আড্ডাখানায় পরিণত না হয়।
ব্যক্তিগত মতামতঃ পড়াশোনায় মনোযোগ ধরে রাখার উপায়
পড়াশোনায় মনোযোগ ধরে রাখার উপায় গুলোর মধ্যে একটি হলো শুধু বইয়ের
মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবেন না। সময় পেলে ঘুরতে চলে যান। বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে
অনেক কিছু শেখার আছে। অনেক সময় বন্ধু-বান্ধবদের পাল্লায় পড়ে স্কুল কলেজ ফাঁকি দিয়ে আমরা পার্কে কিংবা অন্য কোথাও ঘুরতে যাই। এতে করে আপনার পড়াশোনার ক্ষতি হতে পারে। সেজন্য এ সমস্ত বন্ধু-বান্ধব থেকে দূরে থাকুন। পড়াশোনার পাশাপাশি
বিশ্রাম নেওয়া জরুরী। আপনাকে একটি ভারসাম্যপূর্ণ জীবন গড়ে তুলতে হবে।
সব বাজ ব্লগিং ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url